বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬


টমেটো প্রথম চাষ করা হয় আমেরিকা অঞ্চলে। খ্রিস্টের জন্মের ৫০০ বছর আগেই অ্যাজটেক ও অন্যান্য জাতির লোকজন টমেটোর চাষ শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফলিক এসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। বোল্ডস্কাই জানিয়েছে কেন আপনার খাদ্যতালিকায় টমেটো রাখা উচিত।
টমেটোর মধ্যে রয়েছে লাইকোপেন এবং ভিটামিন এ; যা অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই নিয়মিত টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
হাড়ের জন্য
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য টমেটোর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড়ের জন্য ভালো এবং অস্টিওপরোসিস রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আপনার যদি হাড় দুর্বল থাকে, তবে অবশ্যই টমেটো খান। আর এর মধ্যে থাকা লাইকোপিন যা হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।
ক্যানসার রোধ করে
টমেটোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যেমন- লাইকোপিন। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের ফ্রি রেডিকেলস দূর করে এবং ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমায়।  ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। টমেটোর কারণে ডিএনএ সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
প্রদাহ দূর করে
প্রদাহের একটি কারণ টিএনএফ-আলফা। টমেটোর কারণে শরীরে টিএনএফ-আলফার মাত্রা কমিয়ে রাখে। এতে শরীরে প্রদাহ কমে। কাজেই টমেটোর জুস পান করে শরীরের জ্বালাপোড়া দূর করতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর চোখ ও ত্বক
স্বাস্থ্যকর ত্বক এবং চোখের জন্য টমেটো বেশ উপকারী। টমেটোর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ- চোখ, ত্বক এবং হাড়কে সুস্থ রাখে। কুচি করে কাটা এক কাপ কাঁচা টমেটো প্রতিদিন খেলে দেহে ভিটামিন এ-র অর্ধেক চাহিদা পূরণ হয়।  
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় টমেটো দেহের শর্করার মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
টমেটোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ভিটামিন সি। যেটা শরীরের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। অসুস্থ শরীর থেকে আরোগ্য পেতে টমেটো খেতে পারেন, এটা রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের জন্য
ভিটামিন সি ত্বকে কলাজেন তৈরিতে কাজ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক রক্ষায় সাহায্য করে।
রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে
ব্লাড ক্লোট বা রক্ত জমাট বাঁধা মৃত্যুঝুঁকির কারণ হতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় রক্তের সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের কারণও হতে পারে। টমেটো এই ক্লোট প্রতিরোধে সাহায্য করে।
স্ট্রোক প্রতিরোধে
টমেটো মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ায়, যা স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। যখন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, তখন স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদি বংশে এই ধরনের রোগের প্রবণতা থাকে, তবে টমেটো খান।
তবে যেকোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

আঙুর বিদেশি ফল হলেও এখন তা অনেকটা দেশি ফলের মতোই পরিচিত হয়ে গেছে। ভিটামিন এ, বি৬, বি, ফোলেট, পটাশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি মিনারেলসে ভরপুর এই ফলের আছে অনেক উপকারিতা। আর একারণেই প্রতিদিন মাত্র আধাকাপ পরিমাণে আঙুর দূর করার ক্ষমতা রাখে নানা শারীরিক সমস্যা। চলুন জেনে নিই আঙুরের কিছু গুণাগুণ-

১. আঙুরের পাতলা খোসায় রেসভেরাট্রোল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানের দেখা মেলে। গবেষণায় দেখা যায় এই রেসভেরাট্রোল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহে ক্যান্সারের কোষ গঠন করতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।

২. অ্যামেরিকান সোসাইটি অফ বোন অ্যান্ড মিনারেলস রিসার্চের মতে আঙুর মাইক্রো নিউট্রিইয়েন্টস যেমন, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাংগানিজে ভরপুর একটি ফল যা হাড়ের গঠন এবং মজবুত হওয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরী। 

৩. আঙুরের ফাইটোকেমিক্যাল হৃদপিণ্ডের পেশির ক্ষতি নিজ থেকেই পূরণে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। প্রতিদিন আঙুর খেলে হৃদপিণ্ডের সুস্থতা এবং দেহের কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

৪. অর্গানিক এসিড, চিনি এবং সেলুসাস যা লেক্সাটিভের উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকরী যা আঙুরের মধ্যে বিদ্যমান। এছাড়াও আঙুরে প্রচুর পরিমাণে ইনস্যলুবেল ফাইবার রয়েছে যা আমাদের পরিপাকনালী পরিষ্কার রাখে। 

৫. আঙুরের আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় মিনারেল রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। 

৬. আঙুরের ইউরিক এসিডের এসিডিটি কমিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্র থেকে এসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং কিডনির ওপর চাপ কমায়। এছাড়া আঙুর পানি জাতীয় ফল হওয়ার কারণে কিডনি পরিস্কারের কাজে সাহায্য করে এবং কিডনির যেকোনো সমস্যা থেকে আমাদের মুক্ত রাখে।

৭. আঙুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লেভানয়েড, মিনারেল, ভিটামিন সি, কে এবং এ। এইসবই আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ফলের রাজা আম হলেও চিকিৎসকরা কিন্তু বলেন ফলের রাজা বেদানা বা আনার। খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সুস্বাদু ফল। টাটকা বেদানা দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও মিষ্টি। এবার জেনে নিন বেদানার স্বাস্থ্যগুণ।
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
বেদানার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম ও ভিটামিন 'সি'। প্রতি দিন বেদানার রস খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণও গ্রিন টি বা রেড ওয়াইনের থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে রয়েছে তিন প্রকার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ট্যানিন, অ্যান্থো সিয়ানিন ও এলাজিক অ্যাসিড। অ্যান্থোসিয়ানিন দেহ কোষ সুস্থ রাখার ফলে ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পারে। ফোলা ভাব কমে, ক্ষয় রুখতে পারে।
২. রক্তচাপ
প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকার কারণে বেদানা সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে স্ট্রেস, টেনশন কমে। হার্টের সমস্যা থাকলে হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
৩. কোলেস্টেরল
আর্টারি পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে বেদানা। বেদানার রস তাই রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে দারুণ উপযোগী। এর পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে রোজ খান বেদানার রস।
৪. ব্যথা ও পেশি
বাত, অস্টিওআর্থারাইটিস, পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে বেদানা। তরুণাস্থির ক্ষয় রুখতেও উপকারী বেদানা।
৫. ক্যানসার
শরীরে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে বেদানা। ফলে ক্যানসার নিজে থেকেই মরে যায়। এই প্রক্রিয়াকে বলে অ্যাপপটোসিস। এর সাহায্যে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে বেদানা। প্রস্টেট ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসারে ভাল কাজ করে বেদানার অ্যান্টিক্যানসার এজেন্ট।
জেনে নিন
বেদানা, আনার বা ডালিম এক রকমের ফল। এর ইংরেজি নাম pomegranate। হিন্দি, উর্দু, ফার্সি ও পশতু ভাষায় একে আনার বলা হয়। কুর্দি ভাষায় 'হিনার' এবং আজারবাইজানি ভাষায় একে 'নার' বলা হয়। সংস্কৃত এবং নেপালি ভাষায় বলা হয় 'দারিম'।
বেদানা গাছ গুল্ম জাতীয়, ৫-৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাকা ফল দেখতে লাল রঙের হয়। ফলের খোসার ভিতরে স্ফটিকের মত লাল রঙের দানা দানা থাকে। সেগুলো খাওয়া হয়।
এর আদি নিবাস ইরান এবং ইরাক। ককেশাস অঞ্চলে এর চাষ প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। সেখান থেকে তা ভারতীয় উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করেছে। বর্তমানে এটি তুরস্ক, ইরান, সিরিয়া, স্পেন, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরাক, লেবানন, মিশর, চীন, বার্মা, সৌদি আরব, ইসরাইল, জর্ডান, ফিলিপাইন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শুষ্ক অঞ্চল, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ ইউরোপ এবং ক্রান্তীয় আফ্রিকায় ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়।
স্পেনীয়রা ১৭৬৯ সালে ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে বেদানা নিয়ে যায়। ফলে বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া ও এরিজোনায় এর চাষ হচ্ছে। উত্তর গোলার্ধে এটি সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মৌসুমে জন্মে। দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত এটি জন্মে

বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

মালটার পুষ্টিগুণ ও অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা
বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় ও সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে মালটা। এটি প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং দামেও বেশ সস্তা। মালটা আমাদের দেশে এখন এতোটাই জনপ্রিয় যে পথে ঘাটেও এর জুস পাওয়া যায়। জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। মালটাতে আছে, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, এবং চর্বিমুক্ত ক্যালরি,। এগুলো ছাড়াও মালটাতে আর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।
চলুন এবার জেনে নেই মালটার অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস মূহের সমৃদ্ধ উৎস। এটি ত্বকে সজীবতা বজায় রাখে এবং ত্বকের বলি রেখা প্রতিরোধ করে লাবণ্য ধরে রাখে। মালটা ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি প্রদাহ জনিত রোগ সারিয়ে তোলে।
২। এক গ্লাস মাল্টার জুসকে ভিটামিন সি এর সবচেয়ে কার্যকর উৎস বলে মনে করা হয়। এটাকে ভিটামিন সি ট্যাবলেট হিসেবেও গ্রহণ করা যায়।
৩। মালটার ভিটামিন সি উপাদান আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যতম সেল প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
৪। উচ্চ মাত্রায় ওষুধ সেবনের সময় মালটার লো-কলেস্টরেল শরীরে ওষুধের পার্শ প্রতিক্রিয়া হতে করে।
৫। এতে উপস্থিত পটাশিয়াম ইকেট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে এবং কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে।
৬। মালটা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। নিয়মিত কমলা খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর আলসার ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সুরক্ষা দেবে। পাকস্থলীকে রাখবে সবল।
৭। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, কমলাতে উপস্থিত লিমিণয়েড, মুখ,ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলী কোমল ও স্তন ক্যান্সারপ্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
৮। কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও হাঁড়ের গঠনে সাহায্য করে।
৯। প্রতিদিন একটি করে কমলা খাওয়ার অভ্যাস আপনার দৃষ্টিশক্তিকে ভাল রাখে। কারণ, কমলায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও পটাসিয়াম। এ ভিটামিনগুলো আপনার দৃষ্টিশক্তির জন্য বেশ উপকারী।

১০। এতে ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে। এন্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ওজন কমাতেও সহায়তা করে।-সূত্র: স্টাইল কেয়ার।

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

*  আমলকি এক প্রকার ভেষজ ফল। আমলকি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Phyllanthus emblicaev Embilca officinalis । অমলকি গাছ ৮ থেকে ১৮ মিটিার উচ্চতা বিশিষ্ট হতে পারে, ঝরা পাতা প্রকৃতির। হালকা সবুজ পাতা, যৌগিক পত্রের পত্রক ছোট, ইঞ্চি লম্বা হয়। হালকা সবুজ স্ত্রী ও পুরুষফুল একই গাছে ধরে। ফল হালকা সবুজ বা হলুদ ও গোলাকৃতি ব্যাস। বাংলাদেমে প্রায় সব অঞ্চলে দেখা যায়।মলকি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে। প্রাথমিক প্রমান পাওয়া গেছে যে, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস রোগে আমলকির রস কিছু কাজ করে। কয়েক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও এর কার্যকারিতার প্রমান পাওয়া গেছে। ইঁদুরের উপর গবেষণা চালিয়ে প্রমান মিলেছে যে, প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগেও আমলকি কার্যকর। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগের পরে ক্ষতিগ্রস্ত প্যানক্রিয়াস (অগ্ন্যাশয়)-এর ক্ষত সারাতে আমলকি কার্যকর। আমলকির ফল, পাতা, ও ছাল থেকে তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধে কিছু রোগ নিরাময়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে যেমন- ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ এবং কিডনি-রোগ।
আমলকি মানুষের রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা হৃাস করতে পারে বলে প্রমাণ রয়েছে। ডায়াবেটিক ইঁদুরের উপর চালানো এক গবেষনায়  দেখা গেছে, আমলকির রস রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে পারে এবং লিভারের কর্মক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করতে পারে। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন সি বা এস্করবিক এসিড থাকে(৪৪৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম)। তা সত্ত্বেও আরো অন্যান্য উপাদান নিয়ে মতভেদ আছে এবং আমলকির এন্টি-অক্সিডেন্টরূপে কার্যকারিতার পেছনে মূল ভূসিকা ভিটামিন সি এর নয়, বরং এলাজিটানন্তু নামক পদার্থসমূহের বলে মনে করা হয়। যেমন এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি(৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন  (১৪%) এতে আরো আছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ। এই ফলে অন্যান্য পলিফেনলও থাকে। যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালি এসিড ও গ্যালিক এসিড।
ব্যবহার :
আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুন বেশি ভিটামিন “সি” রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুন বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন “সি” রয়েছে।
একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন “সি” দরকার। দিনে দুটো আমলকি খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে। স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে আমলকি ফলের জুড়ি নেই। এ ছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুব উপকারী। লিভার ও জন্ডিস রোগে উপকারী বলে ফলটি বিবেচিত।
আমলকি, হরিতকী ও বহেড়াকে একত্রে ত্রিফলা বলা হয়। এ তিনটি শুকনো ফল একত্রে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা ছেঁকে খালি পেটে শরবত হিসেবে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়। বিভিন্ন ধরনের তেল তৈরিতে আমলকি ব্যবহার করা হয়। কাঁচা বা শুকনো আমলকি বেটে একটু মাখন মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম আসে। কাঁচা আমলকি বেটে রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দু তিন ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এভাবে একমাস মাখলে চুলের গোড়া শক্ত, চুল উঠা এবং তাড়াতাড়ি চুল পাকা বন্ধ হবে।
আমলকির ঔষধি গুণ :
ক্স    আমলকি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
ক্স    বমি বন্ধে কাজ করে।
ক্স    দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকির নির্যাস উপকারী।
ক্স    এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিস্কের শক্তিবর্ধক।
ক্স    ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে তুলতেও আমলকি দারুন সাহায্য করে। আমলকির গুণাগুনের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকির নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
–    ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকিতে যথেষ্ট পরিমাণ এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকালস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ এই ফ্রি র্যাডিকালস।
–    আমলকি ত্বক, চুল ও চোখ ভালো রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িও ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
–    আমলকি হজমে সাহায্য করে ও স্টমাক এ্যসিডে ব্যালেন্স বজায় রাখে।
–    আমলকি লিভার ভাল রাখে, ব্রেনের কার্যকলাপে সাহায্য করে ফলে মেন্টাল ফাংশনিং ভাল হয়।
–    আমলকি ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
–    হার্ট সুস্থ রাখে, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তোলে।
–    শরীর ঠান্ডা রাখে, শরীরের কার্য্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, মাসল টোন মজবুত করে।
–    লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
–    জ্বর, বদহজম, সানবার্ন, সানস্ট্রোক থেকে রক্ষা করে।
–    আমলকির জুস দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখার জন্য উপকারী। ছানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যায় উপকারী।
–    পেটের জ্বালা জ্বালা ভাব কম রাখে। লিভারের কার্যকলাপে সাহায্য করে, পাইলস সমস্যা কমায়।
–    শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। ব্রঙ্কাইটেস ও এ্যাজমার জন্য আমলকির জুস উপকারী।
–    আমলকির গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে পারেন। এটি খিদে বাড়াতে সাহায্য করে।
–    এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকি গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে।
–    আমলকিতে সামান্য লবণ, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর খেতে পারেন।
–    খাবারের সাথে আমলকির আচার খেতে পারেন। হজমে সাহায্য করবে।

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

শীতের এই সময়টাতে কমলা ছাড়া কি চলে? বাজারে দেশি-বিদেশি কমলার ছড়াছড়ি। কমলার ভালো দিক হলো, প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ থাকলেও এতে চিনি বা শর্করা কম। তাই ডায়াবেটিক বা স্থূল রোগীরাও খেতে পারবেন।
কমলায় খুব বেশি ক্যালরি নেই। একটা মাঝারি আকারের কমলায় প্রায় ৬২ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এ ছাড়া আছে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। কমলায় পেকটিনের পরিমাণ বেশ ভালো। আর পেকটিন হলো আঁশ। এটি তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, পেট ভরায় ওজন না বাড়িয়ে। কমলার আঁশটুকু ভালো করে পেতে হলে কেবল রস না খেয়ে বরং এর কোষের ওপরকার আবরণ ও সুতার মতো জিনিসগুলোসহ খেতে হবে। একটা কমলার ৯০ শতাংশের বেশি হলো ভিটামিন সি, আঁশের পরিমাণ প্রায় ১৫ শতাংশ। আর সব টক ফলের মতো কমলায়ও ক্যানসার প্রতিরোধী ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট বিদ্যমান। এ ছাড়া এতে আছে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। পটশিয়াম থাকার কারণে কিডনি রোগীরা কয়টি কমলা এক দিনে খেতে পারবেন, তা চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করে নিন। নয়তো এই সময়ে তাজা কমলার স্বাদ পেতে প্রতিদিনই খেতে থাকুন এ মজাদার ফল।

সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬

জলপাই গাছ একধরণের চিরহরিৎ বৃক্ষ। এশিয়া বাংলা দেশ এর কিছু অংশে এটা ভাল জন্মে। জলপাই গাছ ৮-১৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। এর পাতা ৪-১০ সে.মি. লম্বা ও ১-৩ সে.মি. প্রশস্ত হয়ে থাকে। জলপাই ফল বেশ ছোট আকারের, লম্বায় মাত্র ১-২.৫ সে.মি. লম্বা হয়ে থাকে।
যুদ্ধে শান্তির প্রতীক হল জলপাইয়ের পাতা এবং মানুষের শরীরের শান্তির দূত হল জলপাইয়ের তেল যা অলিভ ওয়েল (Olive Oil) আরবিতে জয়তুন (زيت الزيتون )। যেটাকে Liquid Gold বা তরল সোনা নামেও ডাকা হয়। সেই গ্রীক (Greek) সভ্যতার প্রারম্ভিক কাল থেকে এই তেল ব্যবহার হয়ে আসছে, রন্ধন কর্মে ও চিকিৎসা শাস্ত্রে। আকর্ষণীয় এবং মহনীয় সব গুণাবলি এই জলপাইয়ের তেলের মধ্য রয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশে জলপাই তেলের ব্যবহার তেমন নেই। শুধুমাত্র শীতকালে শরীরে মাখার কাজে জলপাই তেল ব্যবহৃত হয়, তাও খুবই কম। এছাড়া খাওয়ার কাজে এটির ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে জলপাই ফল সবাই খায়। বাংলাদেশে জলপাই ফল খুব সস্তা। জলপাই ফলের আঁচার বেশ জনপ্রিয় এদেশে। জলপাই ফলের দামের তুলনায় এর তেলের দাম আকাশচুম্বী।

১৯ শতকের জলপাইয়ের একটি ছবি
জলপাই তেল বা Olive Oil এ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখে। গবেষকরা দেখিয়েছেন খাবারে জলপাইয়ের তেল ব্যাবহারের ফলে শরীরের ব্যাড ক্লোষ্টোরেল এবং গুড ক্লোষ্টোরেল নিয়ন্ত্রণ হয় । জলপাইয়ের তেলের আরেকটা গুণাবলি হল এটা পাকস্থলীর জন্য খুব ভালো। শরীরে এসিড কমায়, যকৃৎ (Liver) পরিষ্কার করে, যেটা প্রতিটি মানুষের ২/৩ দিনে একবার করে দরকার হয়। কোস্ট কাঠিন্য রোগীদের জন্য দিনে ১ চামচ (1 spoon) জলপাই তেল অনেক অনেক উপকারী।সাধারণত সন্তান হওয়ার পর মহিলাদের পেটে সাদা রঙের স্থায়ী দাগ পড়ে যায় । গর্ভধারণ করার পর থেকেই পেটে জলপাই তেল (Olive Oil) মাখলে কোন জন্মদাগ পড়ে না। এটা একটা পরীক্ষিত ব্যাপার। জলপাই তেল গায়ে মাখলে বয়স বাড়ার সাথে ত্বক কুঁচকানো প্রতিরোধ হয় । গবেষকরা ২.৫ কোটি (25 million) লোকজনের উপর গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রতিদিন ২ চামচ কুমারী জলপাই তেল (Virgin Olive Oil) ১ সপ্তাহ ধরে খেলে ক্ষতিকর এলডিএল (LDL) কোলেস্টেরল কমায় এবং উপকারী এইচডিএল (HDL) কোলেস্টেরল বাড়ায়। স্প্যানিশ (Spanish) গবেষকরা দেখিয়েছেন, খাবারে জলপাই তেল ব্যবহার করলে ক্লোন ক্যান্সার (Colon cancer ) প্রতিরোধ হয়। আরও কিছু গবেষক দেখিয়েছ, এটা ব্যাথা নাশক (Pain Killer) হিসাবে কাজ করে। গোসলের পানিতে ১/৪ চামচ ব্যবহার করে গোসল করলে শরীরে শিথিলতা পাওয়া যায়। মেয়েদের রূপ বর্ধনের জন্য এটা অনেকটা কার্যকর। ইসলাম ধর্মেও জলপাইয়ের তেলে খাওয়া এবং ব্যাবহারের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহর রসূল (স.) বলেছেন, “তোমরা এই তেলটি খাও, তা শরীরে মাখাও।“[হযরত আবু হুরাইরা (রদ্বি.) হতে তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ্ বর্ণনা করছেন । ইবনে মাজাহ্-এ হাদিস নং ৩৩২০ । সনদ সহীহ্]। জলপাই তেল যে কোষ্ঠ কাঠিন্য কমে, তা ইবনুল কাইয়্যূম তার "The Medicine of the Prophet (sm.)" বইয়ে তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন ।বাজারে কয়েক ধরনের জলপাইয়ের তেল পাওয়া যায়। যেমন- ১। Extra virgin - এটা প্রথম ধাপ। সরাসরি জলপাই ফল থেকে তৈরি। এসিডেটি ১% এর নিচে। রান্নার জন্য বা সালাদে গবেষকরা এটা প্রস্তাব করেন। ২। Virgin - Extra virgin পরের ধাপ এটা। এতে এসিডের পরিমাণ ১ থেকে ২% থাকে। ৩। Refine Pure - ৩য় ধাপ। এতে এসিডের পরিমাণ ৩% থেকে ৪
No automatic alt text available.
পেঁপের রয়েছে নানা গুণ।*.-একটি ফল পেঁপে, যা মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন।*.-যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা পেঁপে খেতে পারেন।*.-ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম থাকায় যারা মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা পেঁপে খেতে পারেন অনায়াসে।*.-এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি আছে।*.-চোখের সমস্যা বা সর্দিকাশির সমস্যা থাকলে পেঁপে খেতে পারেন, কাজে দেবে।*.-যারা হজমের সমস্যায় ভোগেন তারা পেঁপে খেলে উপকার পাবেন। এইফলে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই।*.-পেঁপেতে আছে পটাশিয়াম। তাই এই ফল রক্তচাপ নিয়ন...
See more
No automatic alt text available.
                                      পেয়ারা রয়েছে নানা গুণ।*.কাঁচা পেয়ারা হৃদ রোগের উপকার করে|*.কাঁচা পেয়ারা লবন দিয়ে খান কাশের ভাল উপকার হবে|*.কাঁচা পেয়ারা রক্ত বর্ধক|*.পেয়ারা বাত পিত্ত কফ নাশক|*.রীর ঠান্ডা রাখার জন্য কাঁচা পেয়ারা অত্যন্ত উপকারী*.যাদের হাতে পায়ে জ্বালা কাঁচা পেয়ারায় উপকার পাবেন|*.পেয়ারা পাতা দাঁতের মাড়ি ব্যথায় উপকার|*.তুলশি গিলই এবং পেয়ারা পাতা সেদ্ধজল জ্বরের জন্য অত্যন্ত উপকারী*.কাঁচা পেয়ারা আনন্দ দায়ক|*.নেশা মুক্তির জন্য কাঁচা পেয়ারার পাতা সেদ্ধ জল খাওয়ান|*.শিকড়, গাছের বাকল, পাতা এবং অপরিপক্ক ফল কলেরা, আমাশয় ও অন্যান্য পেটের পীড়া নিরাময়ে ভাল কাজ করে।*.ক্ষত বা ঘা-এ থেঁতলানো পাতার প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়। পেয়ারার কচি পাতা চিবালে দাঁতের ব্যথা উপশম হয়।
______________________________শীতের ঠান্ডায় রোদ ঝলমলে দিনগুলো শেষ, মলিন হয়ে যাচ্ছে সব। এ বিবর্ণতা কাটিয়ে গা ঝাড়া দিয়ে উঠতেবেশি করে খান ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। আর শীতকালের খাবার মেন্যু অবশ্যই হালকা হওয়া চাই। সম্প্রতি শীতের বিবর্ণতা ঠেকানোর তিন সুপরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফিমেলফার্স্ট অনলাইন।প্রতিদিন সি ভিটামিনমনে করে প্রতিদিনই খান নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন সি। শুধু শীতকালেই নয়, বছরজুড়েই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। এছাড়া ক্লান্তি ও দুর্বলতা কমাতেও কাজে লাগবে এই খাদ্যাভ্যাস।গ্রিল করা খাবারগ্রিল করে নেওয়া রান্না স্বাস্থ্যসম্মত এবং বছরের যে কোনো সময়ই তা খাওয়া যেতে পারে। তবে, শীতের খাবার মেন্যুতে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে পারে গ্রিল করা খাবার। আপনার রান্নাঘর আর ডাইনিং টেবিলে গ্রীষ্মকালের বারবিকিউ’র আবহটা শীতকালেও দারুণ মানিয়ে যাবে।ফল, সালাদ, হালকা খাবার খানশীতের সময় বা এই ঠান্ডার মাসগুলোতেআমাদের খাদ্যগ্রহণের পরিমাণও যেন বেড়ে যায়, বিশেষত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের চাহিদা। আমরা এ সময়েক্যালরিও গ্রহণ করি বেশি। আর এতে আমাদের ওজন বাড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তার চেয়ে ফল আর সালাদ খেয়ে কাটানো গরমের দিনগুলোর দিকেই ফেরার চেষ্টা করা আখেরে ভালো ফল দেয়। এ মৌসুমে শীতকালীন সবজি আর ফলমূলও অনেকটা সহজলভ্য আর দামেও কম। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা চাই মৌসুমী শাক-সবজি আর তাজা ফল।
Image may contain: food
৯৮ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট ৩৮.৪ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৬ গ্রাম, ফাইবার ১.৫ গ্রাম,চর্বি ০.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ০.০৫ থেকে ০.৫৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ০.১৩ থেকে ০.২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৪.০৭ মিলিগ্রাম রয়েছে। কাঁঠালের বিচি ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-১২ এর ভালো উৎস। এছাড়াও আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থায়ামিন, নায়াসিন, লিগন্যান, আইসোফ্ল্যাভোন এবং স্যাপোনিনের মতো ফাইটো ক্যামিক্যালস।স্বাস্থ্য গুরুত্ব:খাবার হিসেবে যেমন সুস্বাদু ও পুষ্টিমানে ভরপুর তেমনই এর রয়েছে স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব।১. কাঁঠালের বিচিতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্টগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং বার্ধক্যের প্রভাব সৃষ্টিকারি উপাদানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।২. ফাইবার ও কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এর কারণে এর গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কম। ফলে এটি ওজন কম বাড়িয়েই জুগাতে পারে অনেক এনার্জি।৩. কাঁঠালবিচির প্রোটিন অত্যন্ত উপকারি। মাছ, মাংস যাদের কম খাওয়া হয় তাদের জন্য আমিষের চাহিদা মেটাতে কাঁঠাল বিচি উৎকৃষ্ট খাবার।৪. কাঁঠালবিচির জীবানুনাশক গুনও রয়েছে। এটি Escherichia coli ও Bacillus megaterium ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর এবং এতে থাকা বিশেষ উপাদান (Jacalin) এইডস রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নয়নে সফল বলে প্রমাণিত হয়েছে।৫. এতে থাকা পটাশিয়াম ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে।আয়ুর্বেদিকগুণ:বহু বছর ধরে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র নানা অসুখের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে কাঁঠালের বিচি।১। কাঁঠালের বিচি বিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।২। এটি হজম শক্তি বাড়ায়।৩। কাঠালের বিচি হলো aphrodisiac অর্থাৎ এটি যৌন আনন্দ বাড়ায়।৪। ধারণা করা হয় কাঁঠালের বিচি টেনশন ও নার্ভাসনেস কাটাতে উপকারি।৫। এ্যালকোহল জাতীয় মাদকের প্রভাব দূর করার জন্যও এর ব্যবহার রয়েছে।আমাদের মতো দেশের যেখানে একটা বড় গোষ্ঠী পুষ্টিচাহিদা মেটাতে অক্ষম সেখানে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে কাঁঠালের বিচি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। সংরক্ষণযোগ্য বলে সারাবছরই এই পুষ্টি গ্রহণ করা সম্ভব। তাই কাঁঠাল খাওয়ার পর বিচিগুলোকেও সংরক্ষণ করুন আর গ্রহণকরুন এর পুষ্টিমান। প্রিয়, স্বাস্থ্যকর খাবার খান, সুস্থ থাকুন।
No automatic alt text available.
ষতিকর লাইপোপ্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়। হৃৎপিন্ড কাজ করে সঠিকভাবে।এতে আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’। এই ভিটামিন দুটি চোখের বিভিন্ন রোগকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। ত্বক, চুল, দাঁত, হাড়কে রাখে মজবুত।রাতকানা, চোখওঠা, চোখের পাতায় ইনফেকশন জনিত সমস্যাগুলো দূর করে এই জলপাই।যে কোনো অপারেশনের পর বা কাটাছেঁড়া শুকানোর জন্য জলপাই খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ, এতে অপারেশনের স্থানে ক্ষতি হতে পারে।নিয়মিত জলপাই খেলে গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে পাথর, বাতের ব্যথা কিংবা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের পরিমাণ কমে যায়।জলপাইয়ে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে, যা দেহের ক্যানসারের জীবাণুকে ধ্বংস করে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে বাড়ায় দ্বিগুণ পরিমাণে।জলপাইয়ের তেল যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য অনেক উপকারী। জলপাই ও এর তেলে নেই কোনো চর্বি বা কোলেস্টেরল। তাই রক্তে চর্বি বা লিপিড জমে যাওয়ারও কোনো ভয় নেই। অন্যদিকে রক্তের চর্বি বা ফ্যাটের পরিমাণও কমায় এই জলপাই।অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট জলপাইতে রয়েছে উচ্চহারে। এই উপাদানের জন্য দেহের রোগ-জীবাণুগুলো মারা যায় এবং অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও ত্বক পায় রক্ষা।
Image may contain: plant, outdoor and nature
েরল কমায়।শরীরের মেদ কমাতেও কাজ করে তেঁতুল।পেটে গ্যাস, হজম সমস্যা, হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী।গর্ভাবস্থায় বমি বমি বমি ভাব দূর করে।তেঁতুল পাতার ভেষজ চা ম্যালেরিয়া জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।শিশুদের পেটের কৃমিনাশকে তেঁতুল বেশ উপকারী ।তেঁতুল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।পাইলস্ চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করাহয়।মুখে ঘাঁ ও ত্বকের প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে।তেঁতুল রক্ত পরিস্কার করে।বাত বা জয়েন্টগুলোতে ব্যথা কমায়।ভিটামিন সি-এর উৎস।পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে।পাকা তেঁতুলে খনিজ পদার্থ অন্য যে কোনো ফলের চেয়ে অনেক বেশি।ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি।আর আয়রনের পরিমাণ নারকেল ছাড়া সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ বেশি।প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তেঁতুলের পুষ্টিমান:ক্যালরি ২৩৯, আমিষ বা প্রোটিন – ২.৮, শর্করা – ৬২.৫ গ্রাম, ফাইবার – ৫.১ গ্রাম, চর্বি – ০.৬ গ্রাম, ফসফরাস – ১১৩ মিলিগ্রাম, লৌহ – ২.৮২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম – ৭৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি – ২ মিলিগ্রাম, মিনারেল বা খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্রাম, ভিটামিন বি – ০.৩৪ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম – ৬২৮ মি:লি, ভিটামিন ই – ০.১ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম, সেলেনিয়াম – ১.৩ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম – ২৮ মিলিগ্রাম, দস্তা – ০.১২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম – ৯২ মিলিগ্রাম, এবং তামা – ০.৮৬ মিলিগ্রাম।
প্রতিদিন ২ কাপের মতো তরমুজ খেলে শরীরে ভিটামিন এ-র চাহিদা পূরণ হয়। তরমুজ খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকে। কারণ ভিটামিন এ ত্বককে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। তরমুজের ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ শরীরে এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই কাপ পরিমাণ তরমুজ খেলে শরীরে ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি-র চাহিদা মেটে। তরমুজে আরও আছে পটাশিয়াম, যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। পটাশিয়াম শরীরে ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ২ কাপ তরমুজে ৩৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পাওয়া যায়। পরিমাণে কম হলেও তরমুজে সোডিয়াম রয়েছে। এছাড়াও আছে থায়ামিন ও ম্যাগনেসিয়াম। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ শরীর সতেজ রাখে। এতে ফ্রি র‌্যাডিকেলস প্রশমিত হয়। ফ্রি র‌্যাডিকেল রক্তনালীতে কোলেস্টেরলের স্তর তৈরি করে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাঁড়ায়। এর থেকে অ্যাজমাও বৃদ্ধি পেতে পারে। হাড়ের জোড়ায় ব্যথা বাড়ে। সবুজ খোসাসহ তরমুজ ক্যানসার রোগীদের জন্য খুবই আদর্শ। অ্যাজমা, ডায়াবেটিসের মতো রোগে ব্যথা উমশমে তরমুজ সাহায্য করে। তরমুজের বিঁচি অন্ত্রের জন্য উপকারী।এছাড়া তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সাহায্য করে ও কিডনির কাজকর্ম ঠিক রাখে।
Image may contain: plant, outdoor and food














বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের ফল আছে। তবে আমের মতো এত সুস্বাদু ফল আর নেই। আমের যেমন ঘ্রাণ, তেমনি মজাদারও বটে। তাই তো বলা হয়, ফলের রাজা আম। আম আঁটিযুক্ত ফল। আম দিয়ে বানানো হয় চাটনি, আচার, আমসত্ত্ব, জুস। গ্রীষ্মকালে আমের সঙ্গে দুধ-কাঁঠাল মিশিয়ে মজাদার খাবার তৈরি হয়। দেখতে গোলাকার, ডিম্বাকার, হূৎপিণ্ডাকার, লম্বা বা সরু নানা আকৃতিতে হয়ে থাকে। আম খুব রসাল ফল। কাঁচা আমের রং সবুজ। পাকলে অনেকটা হলদেটে এবং কমলা মিশ্রিত লাল আভাযুক্ত। কোনো কোনো জাতের আম আছে, যা পাকলেও সবুজ দেখা যায়। আকারভেদে একেকটি আমের ওজন ৭৫০ গ্রাম থেকে প্রায় এক কেজি হয়ে থাকে। এসব আমের বিভিন্ন রকম নাম আছে। ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাত, কাঁচা মিষ্টি, হিমসাগর, আম্রপালি, খিরসাগর, ফজলি, কিষাণভোগ, মোহনভোগ, মিছরিভোগ, গুঁটি, লখনা, আশ্বিনাসহ আমাদের দেশে কয়েক শ প্রজাতির আম রয়েছে।

আম নিয়ে গল্পকথা
মহাভারতে আম নিয়ে মজার এক গল্প রয়েছে। সীতাকে রাবণ অপহরণ করে নিয়ে যায় লঙ্কায়। বন্দী অবস্থায় সীতাকে ফল খাওয়ানো হয়। নাম না-জানা ফল খেয়ে খুব মজা পায় সীতা। নিজের ভাগের অংশ থেকে সীতা কয়েকটা ফল রাম, লক্ষ্মণ ও হনুমানের জন্য রেখে দেয়। কদিন পর সীতার খোঁজে হনুমান গেল লঙ্কায়। ঠিক ঠিক হাজির হয় বন্দী সীতার কাছে।
সীতা হনুমানকে ওই ফল দিয়ে বলে, এগুলো তোমার, রাম ও লক্ষ্মণের জন্য। তোমরা খেয়ো।
হনুমান সেই ফলগুলো থেকে একটা ফল খেয়ে আর লোভ সামলাতে পারেনি। সব ফল একাই খেয়ে ফেলে।
ফিরে যায় সীতার কাছে। বলে, মা, আমি অপরাধ করেছি। ফলগুলো রাম ও লক্ষ্মণকে না দিয়ে একাই খেয়েছি। এখন বলো এই ফলের নাম কী? কোথায় পাওয়া যায়?
সীতা বলে, আমি তো এখানে বন্দী। কোথায় কী আছে আমি বলতে পারব না। এই ফলের কী নাম, তা-ও জানি না। তবে আশপাশেই পাওয়া যাবে হয়তো। খোঁজ করে দেখতে পারো।
হনুমান ফলের সন্ধানে বের হয়।
এত স্বাদের ফল, কী নাম এর? খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে যায় আমবাগান। গাছ থেকে একটি আম খেয়ে হনুমান বুঝতে পারল, সীতার দেওয়া ফলের মতো এই ফলেরও একই রকম স্বাদ। আমগাছে উঠে হনুমান ইচ্ছেমতো খেতে থাকে আর আমের আঁটি এদিক-সেদিক ছুড়ে মারতে থাকে। কথায় বলে, হনুমানের ছুড়ে দেওয়া আমের আঁটি থেকেই এই ভারত উপমহাদেশে জন্ম হয়েছে আমগাছের।
আমআমগাছের ইতিহাস
আমগাছ নিয়ে প্রচলিত গল্পে বলা হয়, ৬৩২-৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে চীন দেশের পর্যটক হিউয়েন সাং ভারতবর্ষে বেড়াতে আসেন। সেই সময় তিনি ফল হিসেবে আমকে পরিচিত করে তোলেন। এরপর জানা যায় যে মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর শাসন আমলে ভারতের লাখবাগের দারভাঙা এলাকায় প্রায় এক লাখ আমগাছ রোপণ করেছিলেন। এটিকে বলা হয় ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে বড় আমবাগান। মূলত মোগল সম্রাটদের আমলে ভারত উপমহাদেশে বিভিন্ন জাতের আমের উদ্ভাবন হয়েছে। আমের ইংরেজি নাম Mango। বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাংগিফেরা ইন্ডিকা।
উন্নত জাতের আম
বাংলাদেশের সব অঞ্চলে আমের চাষ হলেও উন্নত জাতের আম হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ ও দিনাজপুর এলাকায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাজারকে আমবাজারের রাজধানী বলা হয়। এ ছাড়া শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, আলীনগর, রহনপুর এলাকায় আমের বড় বাজার বসে। এখান থেকে আম ব্যবসায়ীরা আম কিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করেন।
আমের পুষ্টিগুণ
আমের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। উচ্চমাত্রার চিনি, ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে এই ফলে। আমে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। শরীরকে রাখে সতেজ। ঘুম আসতে সাহায্য করে। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। আঁশ-জাতীয় ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, মুখের ব্রণ প্রতিরোধ করে। চিকিৎসকদের মতে, আমে খনিজ লবণের উপস্থিতিও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। দাঁত, নখ, চুল, মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী ভূমিকা পালন করে। বুদ্ধি ও শরীরের শক্তি বাড়ানোর জন্য আম ভীষণ জরুরি ফল।
জাতীয় বৃক্ষ আমগাছ
বাংলাদেশের যেদিকে তাকানো যায়, চোখে পড়ে আমগাছ। কি শহরে, কি গ্রামে! সহজলভ্য এই আমগাছ তাই জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
২০১০ সালের ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমগাছকে জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কেন আমগাছকে জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হলো এর কয়েকটি কারণও আছে।
l আমগাছ দেশের সর্বত্রই সহজে জন্মায়।
l আমাদের জাতীয় সংগীতে আমগাছের কথা আছে। ‘ও মা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে...’
l মহান ভাষা আন্দোলনের সময় ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমাবেশ হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায়।
l ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে। এটি মেহেরপুর জেলায় অবস্থিত।
l ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে ব্রিটিশদের হাতে পলাশীর আমবাগানে।
l আমগাছের কাঠ দিয়ে আসবাব বানানো যায় ও জ্বালানি হিসেবেও কাজে লাগে।
l আম সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ফল। খেতে সুস্বাদু।
দেশের প্রায় সব এলাকায় আমগাছ দেখা যায়
কালোজিরা আমরা সকলেই চিনি। নিমকি বা কিছু তেলে ভাজা খাবারে ভিন্ন ধর্মী স্বাদ আনতে কালোজিরা বেশি ব্যবহার করা হয় থাকে। এছারা অনেকেই কালজিরার ভর্তা খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার কালোজিরা খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু কালোজিরার ব্যবহার খাবারে একটু ভিন্নধর্মী স্বাদ আনাতেই সীমাবদ্ধ নয়। আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসাতে কালোজিরার অনেক ব্যবহার হয়। কালোজিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়, যা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন, ফসফরাস। এছাড়াও কালোজিরা আমাদের দেহকে রক্ষা করে অনেক ধরনের রোগের হাত থেকে।
প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ১৪শ’ বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছিলেন, ‘কালোজিরা রোগ নিরাময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তোমরা কালোজিরা ব্যবহার কর, নিশ্চয়ই সাম ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় ক্ষমতা এর মধ্যে নিহিত রয়েছে।’ আর সাম হলো মৃত্যু। সে জন্য যুগ যুগ ধরে পয়গম্বরীয় ওষুধ হিসেবে সুনাম অর্জন করে আসছে।
তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনা তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ক্যানন অব মেডিসিন’-এ বলেছেন, ‘কালোজিরা দেহের প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।’ কালোজিরা তে প্রায় শতাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এর প্রধান উপাদানের মধ্যে প্রোটিন ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ, স্নেহ ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।
প্রতি গ্রাম কালজিরায় যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা নিন্মরূপ­- * প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম,
* ভিটামিন-বি ১.১৫ মাইক্রোগ্রাম
* নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম
* ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম
* আয়রণ ১০৫ মাইক্রোগ্রাম
* ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম
* কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম
* জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম
* ফোলাসিন ৬১০ আইউ
কালোজিরায় কি আছেঃ এতে রয়েছে ক্যন্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হর্মোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।
কালোজিরার ব্যবহারঃ প্রতিদিন কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
মাথাব্যথাঃ
 মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করূন।
চুলপড়াঃ
 লেবু দিয়ে সমস্ত মাথার খুলি ভালোভাবে ঘষুণ। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুন। তারপর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পুর্ন মাথার খুলিতে কালোজিরা তেল মালিশ করুন। ১ সপ্তাতেই চুলপড়া বন্ধ হবে।
কিডনির পাথর ও ব্লাডারঃ
 ২৫০ গ্রাম কালো জিরা ও সমপরিমান বিশুদ্ধ মধু। কালোজিরা উত্তমরূপে গুড়ে করে মধুর সাথে মিশ্রিত করে দুই চামচ মিশ্রন আধাকাপ গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন আধা চা কাপ পরিমাণ তেলসহ পান করতে হবে।
যৌন-দুর্বলতাঃ যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কালোজিরা
কালোজিরা নারী- পুরুষ উভয়ের যৌনক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন কালোজিরা খাবারে সাথে খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করে।
কালোজিরা চুর্ণ ও যয়তুনের তেল (অলিভ অয়েল), ৫০ গ্রাম হেলেঞ্চার রস ও ২০০ গ্রাম খাটি মধু = একত্রে মিশিয়ে সকাল খাবারের পর ১চামচ করে সেব্য।
চেহারার কমনীয়তা ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিঃ
 অলিভ অয়েল ও কালোজিরা তেল মিশিয়ে অঙ্গে মেখে ১ ঘন্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন।
ডায়াবেটিসঃ
প্রতিদিন সকালে এক চিমটি কালজিরা এক গ্লাস পানির সাথে খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
প্রসূতি মাতাদের দুগ্ধ বাড়াতে ও নারী দেহের মাসিক নিয়মিতকরণে এবং মাসিকের ব্যথা নিবারণে কালোজিরার ভূমিকা রয়েছে।
নিয়মিত অল্প পরিমাণ কালোজিরা খেলে মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রক্ত সঞ্চালন ও বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কালোজিরা
কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি করে।
রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে কাজ করে কালোজিরা
কালোজিরা নিন্ম রক্তচাপ কে বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এবং দেহের কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চরক্ত চাপ হ্রাস করে শরীরে রক্ত চাপ এর স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখে।
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করে কালোজিরা
কালোজিরা খেলে আমাদের দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হত। এতে করে মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির হয়। যা আমাদের স্মৃতি শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
হাঁপানী রোগের উপশমে কালোজিরা
যারা হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমসসায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা রাখুন খাদ্য তালিকায়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা উপশম হবে।
রিউমেটিক এবং পিঠেব্যাথা দূর করে কালোজিরা
কালোজিরার থেকে যে তেল বের করা হয় তা আমাদের দেহে বাসা বাঁধা দীর্ঘমেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতে বেশ সাহায্য করে। এছাড়াও সাধারণভাবে কালোজিরা খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।
শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে কালোজিরা
শিশুদের কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে কালোজিরা।
সুতরাং কালো জিরা হোক আমাদের নিত্য সঙ্গী। সু-স্বাস্থ্য অর্জনে ও সংরক্ষনে কালোজিরা জাত ওষুধ গ্রহনে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা জটিলতা সৃষ্টি করে না।
কলা
অবসাদে ভোগা কিছু মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে কলা খেলে ভাল বোধ করেন তারা। কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান প্রোটিন মানুষের শরীরে পরিণত করে সিরোটোনিন হরমোনে। সিরোটোনিন হরমোন অফ হ্যাপিনেস নামে পরিচিত। শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বাড়লে মুড ভাল হয়ে রিল্যাক্স বোধ করে মানুষ। মুড অফ একটি অতি পরিচিত প্রি-মেন্সট্রয়াল সিনড্রোম। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে গ্লুকোজের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মুড ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
অ্যানিমিয়া
কলার মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমান আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্‍পাদনে সাহায্য করে। ফলে অ্যামিনিয়ার সম্ভবনা কমে। এমনকী, অ্যামিনিয়া সারাতেও সাহায্য করে কলা।
রক্তচাপ
কলার মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি অথচ নুনের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রুখতে পারে কলা। ইউ ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কলার এই গুণের কথা মাথায় রেখে স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে কলার ব্যবহার সুপারিশ করেছে।
মস্তিষ্ক
টানা ১ বছর ধরে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল ইংল্যান্ডের টুইকেনহ্যাম স্কুলের ২০০ জন পড়ুয়ার ওপর। পরীক্ষার আগে টানা ব্রেকফাস্ট, ব্রাঞ্চ ও লাঞ্চে কলা খাওয়ানো হয় তাদের। দেখা গিয়েছিল কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম তাদের মনসংযোগ বাড়ানোর ফলে অন্যদের থেকে পরীক্ষায় ভাল করেছিলেন ওই ২০০ জন পড়ুয়া।
কনসটিপেশন
কলার মধ্যে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকায় পেট পরিষ্কার রাখতে কলা অপরিহার্য্য।
হ্যাংওভার
আগের রাতের অতিরিক্ত মদ্যপানের হ্যাংওভার কাটাতে বানান মিল্কশেকের কোনও তুলনা নেই। সঙ্গে যদি থাকে ১ চামচ মধু। কলা শরীরের অস্বস্তি কমায়, দুধ পেট ঠান্ডা করে ও মধু বজায় রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা।
ফলে অম্বলের হাত থেকেও রেহাই পায় শরীর।
মর্নিং সিকনেস
কাজের চাপ, মানসিক চাপে অনেক সময়ই সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করি আমরা। রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকায় কম থাকে এনার্জির মাত্রাও। এই সময় কলা বজায় রাখতে রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা।
মশার কামড়
মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্ন নিতে ক্রিম বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার আগে কলার খোসা ঘষে দেখুন ত্বকের ফুলে ওঠা অংশে।
স্নায়ু
কলায় থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি যা স্নায়ুকে শান্ত করে। মানসিক চাপ কাটাতে ফ্যাটি ফুডের থেকে বেশি প্রয়োজনীয় কলা। কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় কলা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়বিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
আলসার
নরম ও মিহি হওয়ার জন্য পেটের সমস্যায় খুবই উপকারী খাবার কলা। অত্যন্ত খারাপ পেটের রোগেও কলাই একমাত্র ফল যা নির্বিঘ্নে খাওয়া যেতে পারে। কলা অস্বস্তি কমিয়ে আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
তাপমাত্রা নিয়নন্ত্রণ
অনেক দেশে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কলা ব্যবহার করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জ্বর হলে ওষুধের বদলে খাওয়ানো হয় কলা। তাইল্যান্ডে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে কলা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

জাম্বুরা


 রিফ্রেশ এবং সুস্বাদু জাম্বুরা ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার, বায়োফ্লভনয়েড ও পেকটিন। এর অনন্য স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য একে স্বর্গ থেকে আগত ফল (fruit from the paradise) হিসেবেও অবিহিত করা হয়। এটি মানুষের ফিটনেস ঠিক রাখতে ও বিভিন্ন জটিল রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ সহায়তা করে।https://www.facebook.com/1381938695420366/photos/a.1381953485418887.1073741827.1381938695420366/1836298863317678/?type=3&theater
জাম্বুরার বৈজ্ঞানিক নাম: সাইট্রাস প্যারাডিসি।
সাইট্রাস প্যারাডিসি ক্রান্তীয় লেবু জাতীয় গাছ। বোটানিকালি, এটা সিট্রাস পরিবারের উদ্ভিদ। এটা কমলা এর পাশাপাশি জাতীয় উদ্ভিদ। জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু—যাই বলি না কেন ফলটি প্রচুর ভিটামিনসমৃদ্ধ একটি ফল। এটা বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। কোনো জাতের ভেতরে টকটকে লাল । কোনোটির ভেতর আবার সাদা। কোনোটির স্বাদ মিষ্টি আবার কোনোটির স্বাদ টক হয়। বাতাবি লেবু আমাদের দেশ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন ভারত, চীন, জাপান, ফিজি, এমনকি আমেরিকাতেও উত্পন্ন হয়। স্থানভেদে বাতাবি লেবুর রসালো কোষগুলো হলুদ, লাল ও গোলাপি হয়ে থাকে।
জাম্বুরার স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১। সুস্বাদু, জাম্বুরা, ক্যালোরি খুব কম, প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরায় মাত্র ৪২ ক্যালোরি রয়েছে। ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও স্থুলকায়দের জন্য খুবই উপকারী ফল। এটি অদ্রবণীয় ফাইবার ও শালিজাতীয় সমৃদ্ধ। খাবারে কোনো বিষাক্ত দ্রব্য থাকলে এটি তা ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি ক্যান্সার হতে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
২। জাম্বুরার পেকটিন রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় সেইসঙ্গে হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে। রক্তের লোহিত কণিকাকে টক্সিন ও অন্যান্য দূষিত পদার্থের হাত থেকে রক্ষা করে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে।
৩। এ ফলে ভিটামিন-এ এর খুব ভাল মাত্রা রয়েছে (প্রতি ১০০ গ্রামে ১১৫০IU), এছাড়াও এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার, বায়োফ্লভনয়েড, পেকটিন বিটা ক্যারোটিন, ম্যাঙ্গানিজের উত্তম উৎস। গবেষণায় দেখা গেছে এই ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে যা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য উপাদান।
৪। এর ভিটামিন সুস্থ শ্লেষ্মা ঝিল্লি এবং ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সহায়তা করে। এটি প্রাকৃতিক ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ ফল, এবং এর ফ্ল্যাভোনয়েড ফুসফুসের এবং মুখের গহ্বরে ক্যান্সার হুয়া থেকে রক্ষা করে।
৫। বাতাবি লেবুতে আছে বায়োফ্লভনয়েড যা ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষা করে। আর এতে বিদ্যমান ভিটামিন সি রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরের ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মানব শরীরের অন্যতম একটি নিয়ামক হলো রক্ত। এই রক্ত পরিষ্কারে যথেষ্ট সাহায্য করে বাতাবি লেবু।
৬। প্রতি ১০০ গ্রামে বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ ১২০ মা.গ্রা., ভিটামিন ৬০ গ্রাম, ভিটামিন ‘বি’ও থাকে যা এসিডিটি বা গ্যাস প্রতিহত করে।
৭। রক্ত পরিষ্কারের ক্ষমতা থাকায় দেহে কোনো ধরনের বিষাক্ত উপাদান প্রবেশ করলে ধ্বংস করতে পারে। প্রতিদিন এক গ্লাস করে বাতাবি লেবু জুস করে খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।

লেবু

এ সপ্তাহে সাপ্তাহিক স্বদেশ খবর পাঠকদের জন্য মানব জীবনের প্রাত্যহিক সমস্যা সমাধান করার সহজ কিছু টিপস তুলে ধরেছেন ডিআইইউ’র প্রভাষক
সুলতানা বেগম

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরেই লেবুর উপকারী গুণাগুণ মানুষের জানা। এর মাঝে একটা প্রধান উপকারিতা হলো ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদির তৈরি করা রোগ বালাই দূরীকরণ এবং শরীরের সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি। আরেকটা হলো হজম শক্তি বাড়ানো এবং যকৃৎ পরিষ্কারের মাধ্যমে ওজন কমানোর ক্ষমতা। লেবুতে সাইট্রিক এসিড-এর পাশাপাশি আরও রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বায়োফ্লাভোনোয়েড, পেক্টিন এবং লিমোনিন। সকালে এক গ্লাস গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে এসব উপকার সর্বাধিক মাত্রায় পাবে আপনার শরীর। গরম পানি কেন? কারণ ঠাণ্ডা পানির চাইতে গরম পানি শরীরে শোষিত হয় অনেক দ্রুত এবং এর থেকে তত বেশি উপকৃত হবেন আপনি। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন। আর সকালে উঠে অন্য যে কোনো কাজ করার আগেই এটা পান করবেন। তাহলেই পাবেন এর উপকারিতা।

এর অসাধারণ সব উপকারিতা
১. হজমে সহায়ক : শরীর থেকে অযাচিত পদার্থ এবং টক্সিন বের করে দেয় লেবুর রস। আমাদের হজমের জন্য ব্যবহৃত লালা এবং পাচক রসের সাথে বেশ মিল আছে এর গঠন এবং কাজের। আর যকৃত থেকে হজমে সহায়ক এক ধরণের পদার্থ নিঃসরণেও এটি সহায়তা করে।
২. ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে
শরীরে মূত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ক্ষতিকর এবং বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এছাড়া মূত্রনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এটি সহায়ক।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : লেবুতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও লৌহ, যা ঠাণ্ডাজ্বর জাতীয় রোগের বিরুদ্ধে ভীষণ কার্যকর। এতে আরও আছে পটাসিয়াম, যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে থাকা অ্যাসকরবিক এসিড প্রদাহ দূর করে এবং অ্যাজমা বা এ জাতীয় শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমায়। এছাড়াও কফ কমাতে সাহায্য করে লেবু।
৪. শরীরের পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখে : এর অর্থ হলো শরীরের অম্ল-ক্ষারকের মাত্রা ঠিক রাখে লেবু। লেবু হজম হয়ে যাবার পর কিন্তু আর অম্লীয় থাকে না, ক্ষারীয় হয়ে যায়। ফলে এটি রক্তে মিশে যায় এবং শরীরের অম্লতা বাড়তে দেয় না। অম্লতা বেড়ে গেলেই দেখা দেয় রোগ।
৫. ত্বক পরিষ্কার করে : ত্বকের কুঞ্চন এবং দাগ দূর করে লেবুতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য খুব দরকারি হল ভিটামিন সি। ব্রণ বা অ্যাকনি সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এটি দূর করে। আর ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও এটি কার্যকরী।
৬. আপনার মন ভালো করে দেয় : সকালেই প্রাণচাঞ্চল্য বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। খাবার থেকে শক্তি শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় লেবু। আর এর গন্ধে আপনার মন ফুরফুরে হয়ে উঠবে নিমিষেই। দুশ্চিন্তা এবং বিষণœতা দূরীকরণেও এটি অসামান্য।
৭. ক্ষতস্থান সেরে ওঠার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে ক্ষতস্থান সেরে তুলতে সাহায্য করে অ্যাসকরবিক এসিড। আর হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও এটি সহায়ক। স্ট্রেস এবং যে কোনো ধরণের ব্যথার উপশম করে ভিটামিন সি।
৮. নিঃশ্বাসে আনে তরতাজা ভাব : লেবুর রস নিঃশ্বাসে সতেজতা আনা ছাড়াও, এভাবে গরম পানির সাথে লেবুর রস পানে দাঁতের ব্যথা এবং জিঞ্জিভাইটিসের উপশম হয়। তবে এটা পানের পরপরই দাঁত ব্রাশ করবেন না, কারণ সাইট্রিক এসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে ফেলে। আগে দাঁত ব্রাশ করে তারপর এটা পান করা ভালো। আর লেবুপানি পান করার পর বিশুদ্ধ পানি খেতে পারেন এক গ্লাস।
৯. শরীরে তরলের পরিমাণ ঠিক রাখে : রাতে ঘুমানোর সময়ে যে পানি খরচ হয় সেটা পূরণ হয়ে যায় সকাল সকাল এই এক গ্লাস লেবু পানি পানের মাধ্যমে।
১০. ওজন কমাতে সহায়ক : লেবুতে প্রচুর পরিমাণে পেক্টিন থাকে। আঁশজাতীয় এই পদার্থ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ওজন কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের খাবারে এমন অম্লজাতীয় খাবার কম থাকে তাদের ওজন বাড়ে বেশি।
ক্যাপশন যোগ করুন